Kaji Nazrul Islam Er Ukti: ধর্ম, প্রকৃতি ও বন্ধু নিয়ে ৫০ টি বাছাই করা কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি। কাজী নজরুল ইসলাম – বাংলা সাহিত্যের এক বিষ্ময় প্রতিভার নাম কাজী নজরুল ইসলাম , বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক।

কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি
তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন, সে জানে তোমারে ভোলা কি কঠিন।
চপল বিদ্যুতে হেরি’ সে চপলার
ঝিলিক হানে কণ্ঠের মণিহার,
নীল আঁচল হতে তৃষিত ধরার পথে
ছুড়ে ফেলে মুঠি মুঠি বৃষ্টি শেফালিকা।।
তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ? চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ।
কেয়া পাতার তরী ভাসায় কমল -ঝিলে
তরু-লতার শাখা সাজায় হরিৎ নীলে।
ছিটিয়ে মেঠো জল খেলে সে অবিরল
কাজলা দীঘির জলে ঢেউ তোলে
আনমনে ভাসায় পদ্ম-পাতার থালিকা।।
ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা না পেলে তার জীবন দুঃখের ও জড়তার।
আমরা সবাই পাপী;
আপন পাপের বাটখারা দিয়ে;
অন্যের পাপ মাপি !!
আমার যাবার সময় হল দাও বিদায় , মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়।
কপালে সুখ লেখা না থাকলে সে কপাল পাথরে ঠুকেও লাভ নেই। এতে কপাল যথেষ্টই ফোলে, কিন্তু ভাগ্য একটুও ফোলে না।
কামনা আর প্রেম দুটি হচ্ছে সম্পুর্ণ আলাদা। কামনা একটা প্রবল সাময়িক উত্তেজনা মাত্র আর প্রেম হচ্ছে ধীর প্রশান্ত ও চিরন্তন।
নুড়ি হাজার বছর ঝরণায় ডুবে থেকেও রস পায় না।

বন্ধু নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি
যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে, অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে বুঝবে সেদিন বুঝবে!
তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন, সে জানে তোমারে ভোলা কি কঠিন।
মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়ে বিরহের যন্ত্রণা যে কতো কঠিন, কতো ভয়ানক তা একমাত্র ভুক্তভোগীই অনুভব করতে পারে।
ভালবাসার কোন অর্থ বা পরিমাণ নেই।
বল বীর-বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির।”- কাজী নজরুল ইসলাম ( উৎস- ‘বিদ্রোহী’ কবিতা)
বসন্ত এলো এলো এলো রে
পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহরে
মুহু মুহু কুহু কুহু তানে।
কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট, রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।
বসন্ত মুখর আজিদক্ষিণ সমীরণে মর্মর গুঞ্জনেবনে বনে বিহ্বল বাণী ওঠে বাজি।
নামাজ পড়, রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই,তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই।
বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে, আমরা তখনও বসে- বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি, ফিকাহ ও হাদিস চষে।

বাণী কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি
অসুন্দর পৃথিবীকে সুন্দর করতে; সর্বনির্যাতন থেকে মুক্ত করতেই মানুষের জন্ম।
বল বীর-বল উন্নত মম শির!
শির নেহারী’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রীর।
রাখাল বলিয়া কারে করো হেলা, ও-হেলা কাহারে বাজে!
হয়তো গোপনে ব্রজের গোপাল এসেছে রাখাল সাজে।
চাঁদ হেরিছে চাঁদমুখ তার সরসীর আরশিতে
ছোটে তরঙ্গ বাসনা ভঙ্গ সে অঙ্গ পরশিতে।
সত্যকে অস্বীকার করিয়া ভন্ডামি দিয়া কখনো মঙ্গল উৎসবের কল্যাণ প্রদীপ জ্বলিবে না।
তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ?
চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ।
যার ভিত্তি পচে গেছে, তাকে একদম উপড়ে ফেলে নতুন করে ভিত্তি না গাঁথলে তার ওপর ইমারত যতবার খাঁড়া করা যাবে, ততবার তা পড়ে যাবে।
অঞ্জলি লহ মোর সংগীতে
প্রদীপ-শিখা সম কাঁপিছে প্রাণ মম
তোমারে সুন্দর, বন্দিতে সঙ্গীতে।।
তিনিই আর্টিস্ট, যিনি আর্ট ফুটাইয়া তুলিতে পারেন । আর্টের অর্থ সত্য প্রকাশ এবং সত্য মানেই সুন্দর; সত্য চিরমঙ্গলময়।

ধর্ম নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি
নামাজ পড়, রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই,
তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই।
শোন মর্ত্যের জীব অন্যের যত করিবে পীড়ন নিজে হবে তত ক্লীব।
শুণ্যে মহা আকাশে
তুমি মগ্ন লীলা বিলাসে
ভাঙ্গিছো গড়িছো নীতি ক্ষণে ক্ষণে
নির্জনে প্রভু নির্জনে খেলিছো।
অনেক সময় খুব বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে নিজের সত্যেকে অস্বীকার করে ফেলা হয় । তাতে মানুষকে ক্রমেই ছোট করে ফেলে, মাথা নিচু করে আনে ও রকম মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে অহংকারের পৌরুষ অনেক ভালো।
মিথ্যা শুনিনি ভাই এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনও মন্দির-কাবা নাই।
শাস্ত্র না ঘেটে ডুব দাও সখা সত্য সিন্ধু জলে।“- কাজী নজরুল ইসলাম( উৎস ‘ঈশ্বর’ কবিতা)
শিহরি উঠো না শাস্ত্রবিদেরের ক’রোনা ক’ বীর ভয়। তাহারা খোদার খোদ ‘প্রাইভেট সেক্রেটারি’ তো নয়।
পশুর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে আমাদের লাভ কী, যদি আমাদের গৌরব করার মতো কিছু না-ই থাকে।
আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি
জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি দেবতাই হও
টুপি পড়ে টিকি রেখে সদা বলো যেন তুমি পাপী নও
পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং ট্রেডমার্কার ধুম
পুলিশি পোশাক পরিয়া হয়েছ পাপের আসামী গুম।
অন্ধের মতো কিছু না বুঝিয়া, না শুনিয়া, ভেড়ার মতো পেছন ধরিয়া চলিও না । নিজের বুদ্ধি, নিজের কার্যশক্তিকে জাগাইয়া তোলে।

প্রকৃতি নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি
মৌ-লোভী যত মৌলবি আর মোল-লা’রা কন হাত নেড়ে
দেব-দেবী নাম মুখে আনে সবে দাও পাজিটার জাত মেরে
ফতোয়া দিলাম কাফের কাজী ও
যদিও শহীদ হইতে রাজি ও
আমপারা পড়া হামবড়া মোরা এখনও বেড়াই ভাত মেরে
হিন্দুরা ভাবে পার্শী শব্দে কবিতা লেখে ও পা’ত নেড়ে।
বহু যুবককে দেখিয়াছি যাহাদের যৌবনের উর্দির নিচে বার্ধকের কঙ্গাল মূর্তি।
মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।
সত্য যদি লক্ষ্য হয়, সুন্দর ও মঙ্গলের সৃষ্টি সাধনা ব্রত হয়, তবে তাহার লেখা সম্মান লাভ করিবেই করিবে।
আমার যাবার সময় হল দাও বিদায়
মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়।।
ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে
ঝরে ধুলায় ভোর বেলাতে
আমায় তারা ডাকে সাথী আয়রে আয়
সজল করুণ নয়ন তোলো দাও বিদায়।।
খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে
বিরাট শিশু আনমনে।
প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা
নিরজনে প্রভু নিরজনে।।
সে দেশে যবে বাদল ঝরে
কাঁদে না কি প্রাণ একেলা ঘরে,
বিরহ ব্যথা নাহি কি সেথা বাজে না বাঁশি নদীর তীরে।।
ছবি আমার বুকে বেধে
পাগল হয়ে কেঁদে কেঁদে
ফিরবে মরু কানন গিরি
সাগর আকাশ বাতাশ চিরি
সেদিন আমায় খুজবে
বুঝবে সেদিন বুঝবে।
আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেনী,
তন্বী নয়নে বহ্নি,
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম,
আমি ধন্যি।
কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি গুলো আপনার কেমন লাগলো মন্তব্য করে জানাবেন যদি পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।